বেড়িয়ে আসল ভয়ঙ্কর তথ্য- রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রাস্তায় জোর করে প্রাইভেটকারে (ঢাকা মেট্রো- গ ২৯-৫৪১৪) তুলে তরুণীকে ধর্ষণের সময় রনি হক নামে একজনকে হাতেনাতে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জনগণ। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
আটক রনি ধানমন্ডি ১৫ নং ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা বলে জানা গেছে। এছাড়া গাড়িতে যে তরুণীটিকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছিল তিনি গর্ভবতী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রনি হকের প্রফাইল ঘেটে দেখা গেছে, তিনি যুবলীগ নেতা। ধানমন্ডিতে তার বাসা। সেখানেই স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতাদের সথে তার ফেসবুকে ছবি রয়েছে। এছাড়া যুবলীগের নেতাদের সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে।
সন্দেহভাজন গাড়িচালক এখনও পলাতক। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (৯ জুন) গভীর রাতে ঘটনার দুটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন রাফি আহমেদ নামে এক ব্যক্তি।
রাফি আহমেদ তার ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি অফিস থেকে ফেরার সময় মোহাম্মদপুর কলেজগেট সিগন্যালে তার সামনে থাকা গাড়িতে একজন ছেলে ও একজন মেয়েকে ধস্তাধস্তি করতে দেখেন। গাড়ির গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তিনি গাড়িটিকে অনুসরণ করেন। জ্যামের কারণে গাড়িটি পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বলে পোস্টে উল্লেখ করেন রাফি।
গাড়ির ভেতরের ধস্তাধস্তি রাফি আহমেদসহ রাস্তায় থাকা আরও অনেকের নজরে আসে। রাফি আহমেদ তার পোস্টে দাবি করেন, গাড়িটি জ্যামে আটকা পড়লে তিনিসহ সাধারণ মানুষ গাড়িটির সামনে গিয়ে দেখেন ছেলেটি মেয়েটিকে ধর্ষণ করছে।
মেয়েটিকে রাস্তা থেকে জোর করে গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করা হচ্ছিল বলে মেয়েটির বরাত দিয়ে দাবি করেন রাফি আহমেদ।
ভিডিওতে দেখা যায়, জনতা ওই ব্যক্তি ও তার গাড়ির চালককে বাইরে বের করে পিটুনি দিচ্ছে। এক পর্যায়ে ‘ধর্ষণকারী’ ও গাড়ির চালক উভয়কেই নগ্ন করে রাস্তায় মারধর করতে দেখা যায়।
ধর্ষণের চেষ্টায় থাকা ওই ব্যক্তির নাম রনি। তেজগাঁও জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ বলেছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণ পুলিশকে জানিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কথা। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী সংসদ ভবনের পাশে খেজুর বাগান এলাকা থেকে চুক্তির বিনিময়ে দুই তরুণীকে গাড়িতে তুলেন তারা। কলেজ গেটের সামনে এক তরুণীকে নামিয়ে দেয়ার সময় বাগবিতণ্ডা হয়। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা গাড়ি আটক করে তাদের পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে ভুক্তভোগিরা এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। তাদের খোঁজা হচ্ছে। অভিযোগ পেলেই মামলা করা হবে। আর যদি তাদের না পাওয়া যায় আইন অনুযায়ী রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, একটু গভীর রাতেই ঘটনাটি ঘটেছে। কারণ সে সময় আশপাশের ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ ছিল।
মেয়েটিকে উদ্ধারকর্তা তরুণদের একজন ভিডিও করে সেটি ফেসবুকে ছড়িয়েছেন। আর ঘটনার বর্ণনাও তিনি দিয়েছেন।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি ভিডিও সহ স্ট্যাটাসে লিখেন, আজ অফিস থেকে ফেরার পথে মোহাম্মদপুর, কলেজ গেট সিগনালে ঠিক আমার সামনের গাড়িটাতে লক্ষ্য করে দেখি ভেতরে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে ধস্তা-ধস্তি করছে এবং গাড়ির ড্রাইভার এর গাড়ি চালানোর ভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছিলো যে সে গাড়িটা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে ।
তবে দুর্ভাগ্য তাদের, রাস্তায় তীব্র জ্যাম থাকায় গাড়িটি বেশি দূর যেতে পারেনি। এমতাবস্তায় আমি আমার গাড়ি থেকে নেমে সামনে যেতে যেতে দেখি আরো কিছু লোক গাড়িটির দিকে লক্ষ্য করে এগুচ্ছে । তখনও ভাবতে পারিনি এতটা নিচ ও নিকৃষ্ট ঘটনার চাক্ষুষ প্রমাণ হতে যাচ্ছি।
আমি গাড়িটির কাচ্ছে যেতেই দেখি ছেলেটি মেয়েটিকে ধর্ষণ করছে। গাড়ির দরজা খুলে প্রথমে আমরা মেয়েটিকে বাইরে বের করে নিয়ে আসি পরে অপর পাশের দরজা খুলতেই দেখি অতিপরিচিত সেই ছেলেটি অর্থাৎ বড়লোক বাবার বখে যাওয়া নষ্ট সন্তান।
ছেলেটিকে বাইরে বের করতে গিয়ে সহ্য করতে হয়েছে বাজে মদের গন্ধ। আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না, অতঃপর বসিয়ে দিলাম ওই জানোয়ারের কানের নিচে আমার বাম হাতের পাঁচ আংগুলের চিহ্ন। এরপর ক্ষুব্ধ জনতা চিলের মতো করে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের বাকি দায়িত্ব পালন করলো।
পরে মেয়েটির কাছ থেকে জানতে পারলাম, ওই নর-পিচাশটা মেয়েটিকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে এসেছে।